আজ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চন্দনাইশে শিম চাষে বেড়েছে আগ্রহ, লাভবান চাষিরা


মুহাম্মদ আরফাত হোসেন

চন্দনাইশের শিম স্বাদ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় চাহিদা রয়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। তাই শিম চাষের পরিধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে চন্দনাইশে মৌসুমের পর মৌসুম। উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে শিমের চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে বিস্তীর্ণ শিম ক্ষেত ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। ইতোমধ্যে বিক্রিও শুরু করেছেন কৃষকরা।

জানা যায়, গত মৌসুমে উপজেলায় শিমের চাষ হয়েছিল ৩৬০ হেক্টর। উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে অধিকাংশ শিম চাষ হয় ধোপাছড়ি ইউনিয়ন ও দোহাজারী পৌরসভা এলাকায়। চলতি মৌসুমে ধোপাছড়ি ইউনিয়নে ১৬০ হেক্টর, দোহাজারী পৌরসভায় ১৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। ১৫ দিন আগে থেকেই ধোপাছড়ি অঞ্চলের শিম যাচ্ছে দোহাজারী পাইকারী বাজার হয়ে চট্টগ্রাম নগরীসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি শিম খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ইতোমধ্যে শিম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চন্দনাইশের অনেক কৃষক। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো উপজেলার শিম চাষিরা পরিপক্ক শিম বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। শিম চাষে সফল ইউপি সদস্য আশরাফ উদ্দীন ভুইয়া বলেন, উচ্চ শিক্ষিত হয়ে সরকারি বেসরকারি চাকুরির জন্য বসে না থেকে বিজ্ঞান সম্মতভাবে চাষাবাদে নেমে পড়লে আজকের যুব সমাজ সফলতার দেখা পাবে নিঃসন্দেহে। কৃষির উপর নির্ভর করে স্ত্রী, ১ ছেলে, ১ মেয়ে নিয়ে এখন সুখেই আছেন ইউপি সদস্য আশরাফ উদ্দীন ভুইয়া।

একই এলাকার নুরুল আলম চলতি মৌসুমে ২ কানি (৮০ শতক) জমিতে শিম চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি ১৫/২০ কেজি করে কয়েকবার পরিপক্ক শিম পাইকারী বাজারে ১০০ টাকা করে বিক্রি করেছেন। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি তিনি। চিরিংঘাটা ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ- সহকারী কৃষি অফিসার সাজু দাশ জানান, চলতি মৌসুমে ধোপাছড়ি ইউনিয়নে প্রায় ১৬০ হেক্টরের মতো শিম চাষ হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় ৩০ হেক্টর বেশি। প্রতি মৌসুমে বাড়ছে শিম চাষের পরিধি শিম চাষ করে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকরা। প্রথম পর্যায়ে শিম ও শিমের বিচি বিক্রি করেন এবং পরবর্তীতে বিক্রির জন্য শিমির বিচি শুকিয়ে সংগ্রহ করে রাখেন এবং প্রয়োজনীয় মুহুর্তে বিক্রি করতে পারেন। একইভাবে দোহাজারী, দিয়াকুল ও চাগাচর ব্লকে চলতি মৌসুমে ১৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ করেছেন কৃষকরা। চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসাইন জানান, পাহাড়, নদী ও সমতল পরিবেষ্টিত চন্দনাইশ উপজেলায় সিজনাল সবজির চাষাবাদ হয় প্রচুর। বিশেষ করে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ বেশি হওয়ায় চন্দনাইশ ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের শষ্য ভান্ডার হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির পাশাপাশি শিম চাষও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চন্দনাইশে। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রণোদনা হিসেবে সরকারিভাবে বিভিন্ন কৃষি উপকরণ প্রদান করায় সফল হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর